বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ :
ঢাকা ও কলকাতার বায়ু খুবই অস্বাস্থ্যকর ঢাকায় দিনভর অনুভূত হবে শীত ফরিদপুরে রেল ক্রসিংয়ে নিহত ৫ জনের পরিচয় মিলেছে এইবারও বিএনপির হাতছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ ফতুল্লায় এক গ্যারেজের ভেতরে চালককে হত্যা, দুই ইজিবাইক ছিনতাই জুলাই বিপ্লবে আহতদের মধ্যে প্রথমে ১০০ জনকে পুলিশে চাকরি দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয় গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি সাইফুজ্জামান শেখর ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ দুর্নীতি মামলা অজানা কারণে মামলা থাকলেও পুলিশ গ্রেফতার করছে না তিন চাঁদাবাজকে আর্থিক খাতে এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনিঃ হুসনে আরা শিখা

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় কেন, প্রশ্ন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনে সোরেন প্রশ্ন তুলেছেন, কিসের ভিত্তিতে শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছে মোদি সরকার?

সোরেন আরও উল্লেখ করেছেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে থাকে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের “অনুপ্রবেশকারী” ইস্যুতে মন্তব্যের জবাবে সোরেন এসব কথা বলেন। রোববার (৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির ইশতেহার প্রকাশ এবং “অনুপ্রবেশ” সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিতর্কিত মন্তব্যের জবাবে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সোরেন উল্লেখ করেছেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটে। একইসঙ্গে তিনি এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার কিসের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছে।

রোববার গাড়োয়া বিধানসভা আসনের রাঙ্কায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বলেন, “আমি জানতে চাই, বাংলাদেশের সাথে বিজেপির কোনও ধরনের অভ্যন্তরীণ কোনও বোঝাপড়া আছে কিনা।

তিনি বলেন, “দয়া করে আমাদের বলুন— কিসের ভিত্তিতে আপনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ভারতে প্রবেশ করার এবং আশ্রয় চাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমেই ভারতে প্রবেশ করে। তারা নিজেরাই এটা বলছে।”

এর আগে রোববার বিজেপির ইশতেহার প্রকাশের সময় অমিত শাহ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশকারীদের “আশ্রয়” দেওয়ার অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “আপনি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়েছেন। আপনি অনুপ্রবেশকারীদের আপনার ভোটব্যাংক বানিয়েছেন। আজ আমি ঝাড়খণ্ডের জনগণকে জানাতে চাই, তুষ্টির রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বিজেপি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেবে এবং ঝাড়খণ্ডকে প্রথম থেকে পুনর্গঠন করবে।

এর আগে ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে বলে গত সেপ্টেম্বরে হুমকি দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একইসঙ্গে তিনি রাজ্যের সাঁওতাল পরগনায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জমি দখল করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের “নীরবতা” নিয়েও সেসময় প্রশ্ন তোলেন।

তবে নির্বাচনের আগে বিজেপি হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে বিভাজনের বীজ বপন করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও উত্তেজনা তৈরি করছে বলে সেসময় অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বিশেষ করে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

এছাড়া ঝাড়খণ্ডে বসবাসরত মুসলিমদের ১১ শতাংশই “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী” বলে কয়েকদিন আগে দাবি করেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন বিজেপির এমপি নিশিকান্ত দুবে। সেসময় তিনি বলেন, “১৯৫১ সালে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ ছিল মুসলিম। এখন এই হার বেড়ে পৌঁছেছে ২৪ শতাংশে। ভারতজুড়ে এই সময়সীমার মধ্যে মুসলিমদের হার বেড়েছে ৪ শতাংশ কিন্তু আমার সাঁওতাল পরগনায় এ হার বেড়ে বর্তমানে ১৫ শতাংশ। এই ১৫ শতাংশের মধ্যে ১১ শতাংশই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এবং ঝাড়খণ্ডের রাজ্য সরকার তাদের গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, চলতি নভেম্বর মাসেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরকদমে কাজ করছে বিজেপি। ওই রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠনের ডাক দিয়েছেন অমিত শাহ। মূলত এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিজেপির প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে “অনুপ্রবেশ সমস্যা”।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৩ এবং ২০ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের ৮১টি আসনে দু’দফায় বিধানসভা ভোট হবে। ভোটের ফলাফল জানা যাবে ২৩ নভেম্বর। ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-কংগ্রেস-আরজেডির ‘মহাগঠবন্ধন’।

এবারও তিন দল একসঙ্গে লড়ছে। সঙ্গে তারা পেয়েছে বাম দল সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-কে। ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে মূল লড়াই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর। গত বার আলাদা লড়লেও বিজেপি এবার সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতোর ‘অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আজসু)-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছে। সঙ্গে রয়েছে বিহারের নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপি (রামবিলাস)।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com